(Muslimbd24.com)
শিশুর জন্মের পর নবজাতক শিশুর জন্য মাতা পিতার একটি বিশেষ কর্তব্য হল
অন্তত জন্মের সপ্তম দিবসে তার জন্য একটি শ্রুতি মধুর ও ভালো অর্থবোধক নাম রাখা,
আল্লাহ তায়ালাও হযরত আদম আলাইহিসালাম কে সব জিনিসের নাম শিখিয়ে দিয়েছিলেন।
এর থেকে বোঝা যায় যে নাম জানা বা নাম রাখার বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।
নামের প্রভাব:
মানুষের জীবনে নামের বিরাট প্রভাব পড়ে।
সন্তানের জন্য একটি সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখা প্রত্যেক পিতা-মাতার গুরুদায়িত্ব,
যাতে এ নামের প্রভাবে পরবর্তী জীবনে সন্তানের স্বভাব চরিত্রে শুুভ্রতা ফুটে উঠে।
এ ব্যাপারে হাদীস শরীফে বর্ণিত আছে:
হযরত সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব (রাযি:) হতে বর্ণিত তিনি বর্ণনা করেন যে,
(একবার) তার দাদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর কাছে গেলে
তিনি (সা:) তাকে জিজ্ঞাসা করেন তোমার নাম কি? তিনি বললেন আমার নাম হায্ন (শক্ত)!
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন
না, বরং তোমার নাম হওয়া উচিত সাহল (সহজ সরল)
তিনি উত্তরে বললেন আমার পিতা আমার যে নাম রেখেছেন তা আমি পরিবর্তন করব না,!
সাঈদ ইবনুল মুসাইয়্যাব রাযি বলেন এরপর থেকে আমাদের পরিবারে
পরবর্তীকালে কঠিন অবস্থা, এবং পেরেশানি সর্বদা লেগেই থাকত।
সুতরাং বুঝা গেল অর্থ না জেনে নাম রাখা ঠিক নয়,
এতে অর্থ বিকৃতি ও হাস্যকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
তাছাড়া নাম রাখার ক্ষেত্রেও অর্থ প্রয়োগবিধি ও ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট স্মরণ রাখা একান্ত প্রয়োজন।
বিদেশি ভাষার অর্থ জানা সচেতন শিক্ষিত ব্যক্তির সহায়তা নিয়ে নাম রাখা উচিত,
বিশিষ্ট ধর্মীয় ব্যক্তিবর্গের নামে নাম রাখাও একটি নিরাপদ পন্থা।
‘জন্মের সপ্তম দিনের শিশুর নামকরণ করা উত্তম’ হাদিস শরীফে বর্ণিত হয়েছে
হযরত সামুরা ইবনে যুন্দুব (রাযি:)থেকে বর্ণিত
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এরশাদ করেছেন,
“প্রত্যেক নবজাতক আকিকার সাথে সম্পৃক্ত সুতরাং জন্মের সপ্তম দিন
তার পক্ষ থেকে প্রাণি জবেহ করবে, তার নাম রাখবে,
আর মাথা মুন্ডন করবে তার নাম রাখবে আর তার মাথা মুন্ডন করবে।
আল্লাহ তাআলার নিকট সবচেয়ে পছন্দনীয় নাম:
এ প্রসঙ্গে রাসূলুল্লাহ সাল্লাম বলেন
আল্লাহর নিকট সবচেয়ে প্রিয় নাম হল আব্দুল্লাহ ও আব্দুর রহমান।
আল্লাহ তাআলার বহু গুণবাচক নাম রয়েছে ওই সমস্ত নামের সাথে “আবদ” যোগ করে নাম রাখা উত্তম।
অনুরূপভাবে নবী-রাসূলগণের নামের সাথে মিলিয়ে নাম রাখাও উত্তম,
অজানা কারণে বা অবহেলা বশত কোন অর্থহীন নাম রেখে ফেললে,
তা পরিবর্তন করে একটি সুন্দর অর্থবোধক নাম রাখা অবশ্যই কর্তব্য।
রাসূলুল্লাহ কোন সাহাবীর ইসলাম পূর্ববর্তী যুগের রাখা এ ধরনের কোন নাম শুনতে পেলে
সাথে সাথে তার নাম পরিবর্তন করে একটি সুন্দর অর্থবোধক ও শ্রুতি মধুর নাম রেখে দিতেন।
এছাড়াও রাসূলুল্লাহ সাল্লাম এর পবিত্র নাম “মোহাম্মদ” নামে নামকরণের বিশেষ ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।
রাসূলুল্লাহ এর পুতপবিত্র নাম ধারণ করে কল্যাণ ও বরকত অর্জনের মানসিকতা পোষণ করা প্রত্যেক মুসলমানের অবশ্যই কাম্য হওয়া উচিত।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে কথাগুলোর উপর আমল করার তৌফিক দান করুন আমীন।