মুসলিমবিডি২৪ডটকম
স্ত্রীলোক রাগান্বিত হলে আমরাও তাদের জবাব দিতে শুরু করি৷
ফলে সংসারে এমন সব অশান্তির সূচনা ঘটে যা চাইলে খুব সহজেই এড়িয়ে যাওয়া যেতো।
এটি একটি পুরুষের শানে বেমানান কাজ যে সে তার স্ত্রীর কথার পিঠে কথা লাগিয়ে তর্ক জুড়ে দিবে।
সংসারের বিভিন্ন বিষয়ে টুকটাক রাগ দেখানো, চেচামেচি করা স্ত্রীদের অধীকার।
কথিত আছে যে, এক ব্যক্তি তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে
খলীফা ‘উমার ইবনুল খাত্তাব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হলো।
বাড়ির কাছাকাছি আসতেই তিনি শুনতে পেলেন হযরত উমারের (রা.) স্ত্রী তাঁর সাথে ঝগড়া করছেন আর খলীফা উমার (রা) নীরবে সব শুনে যাচ্ছেন।
এ অবস্থা বুঝতে পেরে লোকটি আর কোনো সাড়া শব্দ না করে, খলীফার সাথে সাক্ষাৎ ও তাঁর নিকট অভিযোগ না করেই ফিরে যেতে উদ্যত হলো।
সে ভাবল, আমীরুল মুমিনীন খলীফাতুল মুসলিমীন উমারের (রা) মতো ব্যক্তিত্বের অবস্থা যদি এই হয়,
যিনি অত্যন্ত কঠোর, যাকে সবাই ভয় পায়, তা হলে আমার মতো সাধারণ মানুষের অবস্থা আর কী হতে পারে?
ঠিক এমন সময় হযরত উমার (রা.) ঘরের দরজায় এসে দেখলেন একজন লোক চলে যাচ্ছে।
তিনি লোকটিকে ডেকে জিজ্ঞেস করলেন, “তোমার প্রয়োজনের কথা না বলেই তুমি চলে যাচ্ছ কেন?” লোকটি জবাব দিল,
“যার জন্য আমি এসেছিলাম, সে জবাব আমি পেয়ে গেছি। আমার স্ত্রী আমার সাথে উঁচু গলায় কথা বলে।
সে অভিযোগ নিয়েই আমি এসেছিলাম। কিন্তু এখন দেখছি আপনার অবস্থাও আমার মতোই।”
“উমার (রা) উত্তর দিলেন, “আমি সহ্য করে নিই। কারণ আমার ওপর তার অনেক অধিকার রয়েছে।
সে আমার খাবার তৈরি করে, রুটি তৈরি করে, কাপড় ধুয়ে দেয়, আমার সন্তানকে দুগ্ধপান করায়,
তাদের লালন-পালন করে, আমার হৃদয়ে শাস্তি আনে, অনেক কিছুই করে, তাই একটু সহ্য করে নিই।”
এটা শুনে লোকটি বলল, “হে আমীরুল মুমিনীন, আমার স্ত্রীও তো অনুরূপ”।
উমার (রা.) বললেন, “তা হলে সহ্য করে নাও ভাই, তারা তো সামান্য সময়ই রাগান্বিত থাকে।”
তথ্যসূত্র
[এ ঘটনাটি উল্লেখ করেছেন শাইখ সুলাইমান ইবন মুহাম্মাদ আল-বুজাইলিনী, আল-হাশিয়া (আলা শাবছিল মিনহাজ, ৩/৪৪১-৪৪২।আরও উল্লোখ করেছেন আবুল লাইছ আস-সাদী আল- হানাফী, তাম্বীহুল গাফেলীন বি আহানীসি সাইদিল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, পৃ. ৫১৭
এবং হাজার আল-হাইসামী, আয-যাওয়াজির কী ইকতিরামিল কাবাইর, ২/৮০]