(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
কোরআনে করীমের কোন এক হরফের স্থলে অন্য হরফ পড়ে নিলে নামাজ ফাসেব হবে কি-না এ সম্পর্কে- উলামায়ে কেরামের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত হচ্ছে এই:
(ক) সাধারণ লোক যারা মাখরাজ ও সিফাত সম্পর্কে জ্ঞাত নয় তাদের জবান থেকে যদি অজ্ঞতাবশত:
কিংবা পার্থক্যকরণের অভাবে এক হরফের স্থলে অন্য হরফ বেরিয়ে আসে আর তার ধারণা যদি এই হয় যে,
সে কোরআন শরীফে বিদ্যমান হরফটিই উচ্চারণ করেছে তাহলে এমতাবস্থায় এই ব্যক্তির নামাজ ফাসেদ হবে না।
(খ) যে ব্যক্তি মাখরাজ ও সিফাত সম্পর্কে জ্ঞাত এবং সহীহভাবে হরফ উচ্চারণেও সক্ষম সে যদি সেচ্ছায় কিংবা অসাবধানতাবশত:
হরফ ভুল উচ্চারণ করে আর এতে যদি উক্ত আয়াতের অর্থের মধ্যে মারাত্মক পরিবর্তন সৃষ্টি হয়ে যায়, তাহলে তার নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
কোরআনে করীমের হরফগুলো সঠিকভাবে উচ্চারণ না করার সমস্যাটি মানুষের মধ্যে,
ব্যাপকহারে দেখা দেয়ার কারণে পরবর্তী যুগের উলামায়ে কিরাম উপরোক্ত ফাতাওয়া দিয়েছেন।
পূর্বেকার যুগের উলামায়ে কিরামের এতদসংক্রান্ত ফাতাওয়া ছিল খুবই কঠোর ও শক্ত।
সে ফাতাওয়ার দৃষ্টিতে বর্তমান যুগের সাধারণ লোক তো দূরের কথা অনেক ক্বারী সাহেবানদেরও নামাজ শুদ্ধ হওয়া ছিল দুষ্কর।
(দেখুন-ফাতায়ায়ে শামী-১/৬৩৩, ফাতাওয়ায়ে আলমগীরী-১/৭৯, কবীরী-৪৪৮)
মোটকথা
মাখরাজ ও সিফাতের দিক দিয়ে ‘দোয়াদ’ অক্ষরটি, ‘যোয়া’ এবং ‘দাল’ থেকে পৃথক একটি হরফ।
‘দোয়াদ’ কে ‘যোয়া’ কিংবা ‘দাল’ কোনটাই পড়া ঠিক নয়। কিন্তু কেউ যদি পড়ে নেয় তাহলে তার নামাজ হবে কিনা;
এ সম্পর্কে পূর্বে উল্ল্যেখ করা হয়েছে যে, সাধারণ লোক যাদের মাখরাজ ও সিফাতের জ্ঞান নেই তাদের নামাজ সর্বাবস্থায়ই শুদ্ধ হবে।
কিন্তু বিশেষ ব্যক্তিবর্গ অর্থাৎ, মাখরাজ ও সিফাত সম্পর্কে যারা জ্ঞাত তারা যদি সেচ্ছায় কিংবা অসাবধানতাবশত:
‘দোয়াদ’ এর জায়গায় ‘যোয়া’ অথবা ‘দাল’ পড়ে নেন আর এতে অর্থের মধ্যে মারাত্মক পরিবর্তন সৃষ্টি হয়ে যায় তাহলে নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে।
যেমন, ফিকুহ এবং ফাতাওয়ার ইমাম হযরত ক্বাযীখান (রহ:) উল্লেখ করেন:
“কেউ যদি ‘দোয়াদ’ কে ‘যোয়া’ অথবা ‘যাল’ পড়ে, তাহলে তার নামাজ ফাসেদ হয়ে যাবে” কেননা এক অক্ষর এর জায়গায় অন্য অক্ষর পড়া লাহনে জালী।
লাহনে জালী এর হুকুম হল হারাম। এক অক্ষর এর জায়গায় অন্য অক্ষর পড়ার কারণে অনেক সময় অর্থ পরিবর্তন হয়ে নামাজ ফাসেদ হয়ে যায়।
-ক্বাযীখান (ফাতাওয়ায়ে আলমগীরীর অন্তর্ভুক্ত) ১/১৪৩
সতর্কীকরণ
অজ্ঞতা কিংবা অসাবধানতা বশত: এক হরফের স্থলে অন্য হরফ পড়ে নেওয়ার পর নামাজ ফাসেদ না হওয়া এবং শুদ্ধ থেকে যাওয়ার দরুন এ কথা প্রমাণিত হয় না যে,
সর্বদা এভাবে ভুল পড়তে থাকা জায়েয এবং এতে কোন গোনাহও হবে না বরং নিজের সাধ্যানুযায়ী সহীহ শুদ্ধ করে তিলাওয়াত করার পূর্ণ চেষ্টা করতে হবে।
মশক্ব করতে হবে। অন্যথায়, গোনাহগার হবে।
তবে হ্যা, পরিপূর্ণ চেষ্টা করার পরও যদি কারও পক্ষে কোন অক্ষর সঠিকভাবে উচ্চারণ করা সম্ভব না হয়।
তাহলে তিনি শরীয়তের দৃষ্টিতে মাজুর।
আরো পড়ুন: 👇👇👇
দোয়াদ এর মাখরাজ তথা উচ্চারণ স্থল