(মুসলিমবিডি২৪ ডটকম)
হযরত আলী (রা.) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা:) এই সূরা “সাব্বিহিসমা রাব্বিকাল আলা” কে ভালবাসতেন।
(আহমদ)
ব্যাখ্যা:
হুজুর (সা.) সূরা আলাকে এই জন্য ভালবাসতেন যে, ঐ সূরার মধ্যে এই আয়াত রয়েছে: ” ইন্না- হাযা লাফিসসুহুফিল উলা- সুহুফি ইব্রাহীমা ওয়া মুসা-”
আয়াতের অর্থ: এই সূরার সব বিষয়বস্ত অথবা সর্বশেষ বিষয়বস্তু (অর্থাৎ পরকাল উৎকৃষ্ট ও চিরস্থায়ী হওয়া) পূর্ববর্তী সহিফা সমূহেও লিখিত আছে।
অর্থাৎ হযরত ইব্রাহীম (আ.) ও মুসা (আ.) এর সহীফা সমূহের থেকে কোরআনুল কারীমের সত্যতা প্রমাণ,
এবং ইহুদি ও খৃষ্টানদের ভ্রান্ত মতবাদকে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। ইব্রাহীমী সহিফার বিষয়বস্ত: হযরত আবু জর গিফারী (রা.) রাসূল্লাহ (সা.) কে প্রশ্ন করলেন,
ইব্রাহীম (আ.) এর সহীফা কীরূপ ছিল? রাসূলুল্লাহ (সা.) বললেন, এসব সহিফায় শিক্ষণীয় দৃষ্টান্ত বর্ণিত হয়েছিল।
অন্মধ্যে এক দৃষ্টান্তে অত্যাচারী বাদশাকে সম্বোধন করা বলা হয়েছে “হে ভুঁইফোড় গর্বিত বাদশাহ! আমি তোমাকে ধনেশ্বর স্তুপীকৃত করার জন্য রাজত্ব দান করিনি।
বরং আমি তোমাকে এই জন্য শাসন ক্ষমতা অর্পণ করেছি, যাতে তুমি উৎপীড়িত বদদোয়া আমার পর্যন্ত পৌছতে না দাও।
কেননা, আমার আইন এই যে, আমি উৎপীড়িত দোয়া প্রত্যাখ্যান করি না। যদিও তা কাফেরের মুখ থেকে হয়।
অপর এক দৃষ্টান্তে সাধারণ মানুষকে সম্বোধন করে বলা হয়েছে: বুদ্ধিমানের কাজ হলো নিজের সময়কে তিনভাগে বিভক্ত করা।
একভাগ তার পালনকর্তার ইবাদত ও তার সাথে মুনাজাতকে। একভাগ আত্নসমালোচনা ও আল্লাহর মহা শক্তি এবং কারিগরি সম্পর্কে চিন্তা-ভাবনা করা,
এবং এক ভাগ জীবিকা উপার্জনের ও স্বাভাবিক প্রয়োজনাদি মেটানো।
বুদ্ধিমান ব্যক্তির জন্য অপরিহার্য এই যে, সে সমসাময়িক পরিস্থিতি সম্পর্কে ওয়াকিফহাল থাকবে, উদ্দিষ্ট কাজে নিয়োজিত থাকবে এবং জিহবার হেফাজত করবে।
যে ব্যক্তি নিজের কথাকেও নিজের কর্ম বলে মনে করে, তার কথা খুবই কম হবে এবং কেবল জরুরী বিষয়ে সীমিত থাকবে।
হযরত মুসা আ. এর সহীফার বিষয়বস্ত:
হযরত আবু যর (রা.) বলেন, অত:পর আমি মুসা (আ.) এর সহীফা সম্পর্কে প্রশ্ন করলে রাসূলুল্লাহচ(সা.) বললেন-
এসব সহীফায় কেবল শিক্ষণীয় বিষয়বস্তই ছিল। তন্মধ্যে কয়েকটি বাক্য নিম্নরূপ: আমি সে ব্যক্তির ব্যাপারে বিস্ময়বোধ করি, যে মৃত্যুর দৃঢ় বিশ্বাস রাখে।
অত:পর সে কীরূপে আনন্দিত থাকে। আমি সে ব্যক্তির ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করি, যে বিধিনীতি বিশ্বাস করে।
অত:পর সে কীরূপে অপারগ হতোদ্যম ও চিন্তাযুক্ত হয়। আমি সে ব্যক্তির ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করি, যে দুনিয়া ও দুনিয়ার পরিবর্তনাদী এবং মানুষের উত্থানপতন দেখে,
সে কীরুপে দুনিয়া নিয়ে নিশ্চিত হয়ে বসে থাকে। আমি সেই ব্যক্তি ব্যাপারে আশ্চর্যবোধ করি, যে পরকালের হিসাব নিকাশে বিশ্বাসী।
অত:পর সে কীরূপে কর্মপরিত্যাগ করে বসে থাকে।
(সূত্র: কোরআনের মহিমা-১১৬,১১৭,১১৮)